নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, নদীর তীরের গাছগুলো মেহেরবানি করে কাটবেন না। আম্পানের পর আমরা সাতক্ষীরাতে দেখেছি যেখানে নদীর তীরে গাছ ছিল সেসব স্থানে ভাঙন দেখা দেয়নি। শনিবার (২৯ আগস্ট) সকালে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ লামচরি বেড়িবাঁধ এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় তিনি স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, লামচরি ও চরবাড়িয়া এলাকার মানুষের অনেক দুঃখ-কষ্ট রয়েছে, আজ অনেকে তাদের মনের ক্ষোভ প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন। আপনাদের মনের ক্ষোভকে আমি সম্মান জানাই। কারণ, আপনারা ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধিকে নির্বাচিত করেন, তারপর জনপ্রতিনিধি যদি আপনাদের কাজ না করে তাহলে রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক। তিনি বলেন, আশ্চর্যের বিষয় হলো আমি সংসদ সদস্য হয়েছি মাত্র ১ বছর ৭ মাস। এর আগে যে তিন তিনবার সংসদ সদস্য ছিল, তারা কী করেছে আপনাদের জন্য? তাদের একজন ব্যক্তি যে সংসদীয় এলাকার জন্য কাজ করে না, তাহলে তাকে বার বার কেন নির্বাচিত করেছিলেন? আমি মাত্র হয়েছি, প্রকল্প নেওয়া শুরু করেছি। প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে সময় লাগবে। ৫ বছর সময়ের মধ্যে আমার সংসদীয় এলাকার উন্নত হয় কিনা সেটা দেখবেন। আর সেটা পরবর্তী নির্বাচনের সময় ভোট দিয়ে প্রমাণ করে দেবেন।
নদীর ভাঙন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজ অন্যদের মতো নয় যে, আজ দেখে গেলাম, কাল টেন্ডার হলো এবং কাজ শুরু হয়ে গেল। একেক জায়গার নদীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একেক রকম। এটাকে বিচার-বিবেচনা করে আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি দেখে এবং এরপর সিদ্ধান্ত নিতে হয় কীভাবে কাজ করতে হবে। কোন জায়গায় বাঁধ নির্মাণ করতে হবে আবার কোন জায়গায় ড্রেজিং করতে হবে— এ জন্য সময় লাগে, আমাদের সময় দিতে হবে।
তিনি বলেন, নদীর তীরের গাছগুলো মেহেরবানি করে কাটবেন না। আম্পানের পর আমরা সাতক্ষীরাতে দেখেছি যেখানে নদীর তীরে গাছ ছিল সেসব স্থানে ভাঙন দেখা দেয়নি, আর যেসব জায়গাতে ছিল না সেখানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে যার বাড়ির সামনে ফাঁকা জায়গাতে গাছ লাগান, এটি উপকারে আসবে।
তিনি বলেন, আমরা নদীতে ড্রেজিং করি, তীর রক্ষায় বাঁধ করি। কিন্তু অসাধু লোক এসে নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে, এতে নদী তীর ভেঙে যায়। আর আমরা বাঁধ বানালে তাও ভেঙে যাবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আপনাদের সোচ্চার হতে হবে। সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে এবং সচেতন হতে হবে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, আপনাদেরও সহযোগিতা করতে হবে।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে বরিশাল নগরীর পলাশপুর এলাকায় আলহাজ দলিল উদ্দিন প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিাণাঞ্চল প্রধান প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান মন্টু কুমার বিশ্বাস, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।’
Leave a Reply